ধানের উচ্চ ফলন নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি:
১. উন্নত জাত নির্বাচন:
- জমির ধরন ও আবহাওয়া অনুযায়ী জাত নির্বাচন: এলাকায় খাপ খাওয়ানো উচ্চ ফলনশীল বা হাইব্রিড জাত নির্বাচন করা।
- রোগ প্রতিরোধী জাত বেছে নেওয়া (যেমন BRRI ধানের জাতসমূহ)।
২. জমি প্রস্তুতি:
- জমি ভালোভাবে চাষ করে সমান করা, যাতে পানি জমে না থাকে।
- জৈব সার ও জিপসাম প্রয়োগ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি।
৩. সঠিক সময় বপন ও রোপণ:
- নির্ধারিত সময়ে বীজ বপন ও চারার সঠিক বয়সে রোপণ (২০-২৫ দিনের মধ্যে)।
- চারা রোপণের সময় লাইন মেনে দূরত্ব রাখা (১৫x20 সেমি)।
৪. সুষম সারের ব্যবহার:
- ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশ এবং জিংকের সুষম প্রয়োগ।
- বিস্তারিত প্রয়োগ পদ্ধতি:
- জমি তৈরির সময় টিএসপি ও পটাশ প্রয়োগ।
- ধানের বৃদ্ধির সময় পর্যায়ক্রমে ইউরিয়া প্রয়োগ।
- জিংকের অভাব হলে পরিমাণমতো জিংক সালফেট প্রয়োগ।
৫. পানি ব্যবস্থাপনা:
- রোপণের প্রথম দিকে জমিতে পানি ধরে রাখা এবং শীষ আসার সময় পর্যাপ্ত পানি দেওয়া।
- পাকা ধানের সময় জমি শুকনো রাখা।
৬. বালাই ও রোগ নিয়ন্ত্রণ:
- ক্ষতিকর পোকা:
- গলমাছি: ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার।
- পাতা মোড়ানো পোকা ও মাজরা পোকা: বায়োলজিক্যাল বা উপযুক্ত কীটনাশক প্রয়োগ।
- রোগ:
- ব্লাস্ট বা দাগ রোগ প্রতিরোধে ফাঙ্গিসাইড স্প্রে।
- চিটা ধান রোধে সঠিক সময়ে কার্বেনডাজিম ব্যবহার।
৭. আগাছা নিয়ন্ত্রণ:
- জমিতে আগাছা বৃদ্ধি পেলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করা।
- আগাছানাশক প্রয়োগ বা হাত দিয়ে পরিষ্কার করা।
৮. পর্যবেক্ষণ ও সঠিক সময় কাটা:
- ধানের শীষ ৮০-৯০% পাকা হলেই কাটার প্রস্তুতি।
- পাকা ধান দেরিতে কাটলে ফলনের ক্ষতি হতে পারে।
এই সতর্কতাগুলো মেনে চললে ধানের উৎপাদন বাড়ানো ও গুণগত মান উন্নত রাখা সম্ভব।